প্রকাশিত :
২০ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪০:১৮
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরেছে, তবে এর গঠন আগের নাকি জুলাই সনদের বর্ণিত কাঠামো অনুযায়ী হবে, তা পরবর্তী সংসদ নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ে মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন, ভোট রাতের পরিবর্তে দিনে হবে এবং মৃত মানুষ ভোট দিতে পারবেন না। দেশ গণতান্ত্রিক মহাসড়কে হাঁটা শুরু করেছে।’
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করে রায় দিয়েছেন। তবে এটি কার্যকর হবে চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।’
সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট আপিল ও সিভিল রিভিউসমূহ সর্বসম্মতভাবে মঞ্জুর করা হলো। সেই সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের রায়কে ত্রুটিপূর্ণ ও কলঙ্কিত উল্লেখ করে তা সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফরমেশন ‘হ্যাঁ’/‘না’ ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না। এটা রিস্টোরড হয়েছে, অর্থাৎ পূর্বাবস্থায় ফিরে গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো কোরআন বা বাইবেল নয়। এই রায়ের মাধ্যমে এমন কিছু আসবে না, যা কোরআন বা বাইবেলিক হয়ে যাবে। ২০ বছর পর যদি মানুষ মনে করে এই ব্যবস্থা পচে গলে গেছে, গণতন্ত্র রক্ষায় এর থেকে ভালো কোনো ব্যবস্থা রয়েছে, তখন পার্লামেন্ট সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
আপিল বিভাগ তার পূর্বের রায়কে কলঙ্কিত বলে মন্তব্য করেছেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কলঙ্কিত বলেই সে রায়টা বাতিল করা হয়েছে। অনেকগুলো কারণ আমরা দেখিয়েছি। তার একটা কারণ হিসেবে আমরা বলেছিলাম, এই রায় লেখার ক্ষেত্রে খায়রুল হক ও তার সহযোগীরা দণ্ডবিধি ২১৯ ধারায় অপরাধ করেছেন। মুখ দিয়ে রায় বলে ফেললে সেটা রায়, ওটা পরিবর্তনের আইনি পদ্ধতি রয়েছে। হয় নিজেরা রিভিউ নাম্বার ফেলে পরিবর্তন করতে পারতেন। অথবা অন্য কেউ রিভিউ করে তা পরিবর্তন করতে পারতেন। অথচ মুখের রায়কেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল।’
২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে তৎকালীন আপিল বিভাগ। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর জন্য নতুন আইনি লড়াই শুরু হয়। গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।