আপডেট :
১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫:১৬:১৩
জুলাই গণ-গণঅভ্যুত্থানের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ওপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ এসেছে। মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। মজার বিষয় হলো এই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা নিজেই গঠন করেছিলেন তার শাসনামলে। জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপির নেতাদের ১৯৭১ সালের সহিংসতার অভিযোগ তুলে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল আন্তর্জাতিক এই আদালত। অনেকেই সেই বিচারগুলোকে অন্যায্য বলে অভিযোগ করেছিলেন। আজ সেই ট্রাইব্যুনাল থেকেই শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ এসেছে।
এই বিচারের ন্যায্যতা এবং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দ্রুততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। তবে শেখ হাসিনার প্রশাসন বছরের পর বছর ধরে স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। ঘনিষ্ঠজনদের সম্পদ বাড়ানো, দুর্নীতি আর বিরোধীদের হয়রানি করা তার নিয়মিত কর্মকাণ্ড ছিল। শেখ হাসিনা তার পিতা শেখ মুজিব এবং তার দল আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে এক ধরনের কাল্ট বা আরাধ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এসব করতে গিয়ে বর্জন করা হচ্ছিল গণতান্ত্রিক নীতিগুলো।
গত বছর জনগণের ব্যাপক ক্ষোভের কেন্দ্রে চলে এসেছিল শেখ হাসিনার দমনমূলক পদ্ধতিগুলো। গণঅভ্যুত্থানের ফলে তার সরকারের পতন এবং কয়েক দশক ধরে ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ তাকে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল। শেখ হাসিনার সরকার ২০২৪ সালের অস্থিরতার সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছিল। তিনি নিজেও স্বীকার করেছিলেন যে ‘আমরা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম’। এই বছরের শুরুতে তার দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। 'বঙ্গবন্ধু' হিসেবে শ্রদ্ধেয় শেখ মুজিবর রহমানও বিক্ষোভকারীদের রোষানলের শিকার হয়েছিলেন।
পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হওয়ার পাঁচ দশক পরেও সেই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অধরা। শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছিল, তা তার ভিন্নমত দমন এবং বিরোধীদের ওপর ক্রমাগত আক্রমণের কারণে ম্লান হয়ে গিয়েছিল। আজ বাংলাদেশ একটি জটিল সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছর ফ্রেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছে। অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই পূর্ণ গণতান্ত্রিক শাসন নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হলে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিতে হবে।
কেন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের অনুমতি দিতে হবে?
২০২৪ সালের নির্বাচন বিরোধী দল বর্জন করেছিল। শেখ হাসিনার অন্যায্য ক্ষমতা গ্রহণ তার পতনের একটি প্রধান কারণ ছিল। এ কারণেই প্রক্রিয়াটির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিতে হবে। যারা অপরাধের জন্য দোষী, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু যদি এই প্রক্রিয়া প্রতিশোধের রঙে রঞ্জিত হয়, যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তিও থাকে, তাহলে তা কেবল অস্থিতিশীলতাকেই স্থায়ী করবে। পরিণত রাষ্ট্রগুলো ন্যায়বিচারের দাবি এবং পুনর্গঠনের প্রয়োজনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে।জুলাই গণ-গণঅভ্যুত্থানের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ওপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ এসেছে। মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই বিচারের ন্যায্যতা এবং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দ্রুততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। তবে শেখ হাসিনার প্রশাসন বছরের পর বছর ধরে স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। ঘনিষ্ঠজনদের সম্পদ বাড়ানো, দুর্নীতি আর বিরোধীদের হয়রানি করা তার নিয়মিত কর্মকাণ্ড ছিল। শেখ হাসিনা তার পিতা শেখ মুজিব এবং তার দল আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে এক ধরনের কাল্ট বা আরাধ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এসব করতে গিয়ে বর্জন করা হচ্ছিল গণতান্ত্রিক নীতিগুলো।
গত বছর জনগণের ব্যাপক ক্ষোভের কেন্দ্রে চলে এসেছিল শেখ হাসিনার দমনমূলক পদ্ধতিগুলো। গণঅভ্যুত্থানের ফলে তার সরকারের পতন এবং কয়েক দশক ধরে ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ তাকে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল। শেখ হাসিনার সরকার ২০২৪ সালের অস্থিরতার সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছিল। তিনি নিজেও স্বীকার করেছিলেন যে ‘আমরা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম’। এই বছরের শুরুতে তার দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। 'বঙ্গবন্ধু' হিসেবে শ্রদ্ধেয় শেখ মুজিবর রহমানও বিক্ষোভকারীদের রোষানলের শিকার হয়েছিলেন।
পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হওয়ার পাঁচ দশক পরেও সেই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অধরা। শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছিল, তা তার ভিন্নমত দমন এবং বিরোধীদের ওপর ক্রমাগত আক্রমণের কারণে ম্লান হয়ে গিয়েছিল। আজ বাংলাদেশ একটি জটিল সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছর ফ্রেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছে। অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই পূর্ণ গণতান্ত্রিক শাসন নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হলে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিতে হবে।
২০২৪ সালের নির্বাচন বিরোধী দল বর্জন করেছিল। শেখ হাসিনার অন্যায্য ক্ষমতা গ্রহণ তার পতনের একটি প্রধান কারণ ছিল। এ কারণেই প্রক্রিয়াটির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিতে হবে। যারা অপরাধের জন্য দোষী, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু যদি এই প্রক্রিয়া প্রতিশোধের রঙে রঞ্জিত হয়, যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তিও থাকে, তাহলে তা কেবল অস্থিতিশীলতাকেই স্থায়ী করবে। পরিণত রাষ্ট্রগুলো ন্যায়বিচারের দাবি এবং পুনর্গঠনের প্রয়োজনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে।