আপডেট :
০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:২০:৪২
প্রবাদে ‘হাতে মারবো না, ভাতে মারবো’ এমনটা উল্লেখ থাকলেও রাশিয়াকে চাপে ফেলতে হাত ও ভাত দুই অস্ত্রকেই ব্যবহার করে চলছে ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সবশেষ রাশিয়ার অন্যতম চালিকা শক্তিতে চূড়ান্ত আঘাত হানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপ, এমনটা হলে ইউক্রেন যুদ্ধ চালাতে বেশ বেগ পেতে হবে পুতিনকে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ইউরোপীয় দেশগুলোর সম্মিলিত জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন রুশ অর্থনীতির গুরত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি প্রাকৃতিক গ্যাস বাণিজ্যের ওপর আঘাত হানার সিদ্ধান্ত নেয়। আঞ্চলিক এই জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি বন্ধ করে দিবে। এর মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে রুশ জ্বালানির ওপর চলমান নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে চাইছে ইউরোপ।
জানা যায়, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর ইউরোপের সাবেক শীর্ষ গ্যাস সরবরাহকারী দেশ রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করার জন্য জুন মাসে ইউরোপীয় কমিশনে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এই প্রস্তাবের উপর বুধবার ভোরে ইইউ সরকার ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন।
এই চুক্তির আওতায়, প্রথমে রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে ইউরোপের দেশগুলো। পর্যায়ক্রমে দেশটি থেকে জ্বালানি তেল আমদানিও বন্ধ করা হবে। পরিকল্পনা অনুসারে, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস তথা এলএনজি আমদানি এবং ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ পাইপলাইন গ্যাস আমদানি বন্ধ করা হবে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়ান জানান, এই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি পুরোপুরিভাবে বন্ধ করা হল। এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী পর্ষদ জানায়, পুতিনের যুদ্ধের মনোবলকে ভেঙ্গে দিয়ে ইউরোপ ইউক্রেনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে। গ্যাস আমদানির জন্য ইউরোপ নতুন জ্বালানি অংশীদারত্ব এবং সুযোগের খুঁজছে বলেও জানায় সংস্থাটি।
অক্টোবর পর্যন্ত ইউরোপে আমদানিকৃত গ্যাসের ১২ শতাংশ আসতো রাশিয়া থেকে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পূর্বে দেশটি থেকে ইউরোপের গ্যাস আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৫ শতাংশ। তবে এখনও হাঙ্গেরি, ফ্রান্স ও বেলজিয়াম রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি অব্যাহত রেখেছে।