প্রকাশিত :
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:২০:৫৩
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর জুলাইযোদ্ধা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কাঁধে বসা এক ছোট্ট শিশুর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। অনেকে সেই শিশুকে হাদির সন্তান বলে দাবি করলেও, শিশুটি হাদির সন্তান নয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ছেলে শিশুটির নাম ওমায়েত। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকাতেই থাকে ফুটফুটে শিশুটি। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে আসতোন শিশুটির বাবা, সেসময়ই একদিন শিশুটিকে নিয়ে ওসমান হাদি কাঁধে বসিয়ে ছবি তুলেন। হাদির মৃত্যুর পর ফেসবুকে ছবিটি ভাইরাল হয়, ‘হাদির সন্তান’ বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
তবে শিশুটি ওসমান হাদির সন্তান নয় বলে নিশ্চিত করেছেন জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইসরাফিল ফারাজি।
তিনি বলেন, ‘শিশুটি আজও (শনিবার) ওসমান হাদির জানাজায় তার বাবার সঙ্গে অংশ নিয়েছে। সেসময়ও তার বাবার সঙ্গে হাদির সঙ্গে দেখা করতে আসে। পরে হাদি ভাইয়ের মৃত্যুর পর এ ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে ছেলে শিশুটি হাদির নয়।’
জুলাই ঐক্যের এই সংগঠক আরও বলেন, ‘আমার কোলে থাকা ছোট্ট বিপ্লবী হাদি ভাইয়ের ছেলে নয়। হাদি ভাই আদর করে সেদিন ওরে কাঁধে নিয়েছিলেন। অনেকেই ছোট্ট বাবাকে হাদি ভাইয়ের সন্তান মনে করেছিলেন। তবে এটা নিশ্চিত ও আমাদের ভবিষ্যৎ হাদি হতে যাচ্ছে। ওর বাবা সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন হাদি ভাইয়ের বিপ্লবের পথেই যেন ওর জীবন গড়ে উঠে।’
জানা গেছে, আজ শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে শায়িত হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। জাতীয় কবির পাশে হাদিকে সমাহিত করা হয়।
এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাদির জানাজা সম্পন্ন হয়। দুপুর ২টা ৩৩ মিনিটে অনুষ্ঠিত জানাজায় সারাদেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার হাজারো মানুষের উপস্থিতি হন। জানাজা শেষে দুপুর ৩টার দিকে হাদির মরদেহ বহনকারী গাড়ি ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় নিয়ে আসা হয়।
হাদির জানাজার নামাজ পড়ান তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। এ সময় পুরো এলাকায় শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান বিন হাদিকে মাথায় গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র্য প্রার্থী ছিলেন। গুরুতর আহত ওসমান হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।