প্রকাশিত :
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০০:১৬
বার্নাব্যুতে রাতটা শুরু হয় চাপা উত্তেজনা নিয়ে। দুই দলই আক্রমণে উঠছিল, আবার সহজ সুযোগ নষ্ট করছিল বারবার। গ্যালারিতে বসে থাকা দর্শকদের মনে হচ্ছিল—আজ বুঝি গোল পেতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে।
ম্যাচের শুরুতেই রিয়াল সুযোগ পায়, ফ্রান গার্সিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন সেভিয়ার গোলরক্ষক। সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা আক্রমণে সেভিয়াও বড় সুযোগ পায়। ইসাক রোমেরো একেবারে একা, সামনে শুধু থিবো কোর্তোয়া—কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে বল পাঠালেন বাইরে। সেই মিস যেন ম্যাচের গল্পটাই বলে দিচ্ছিল—সুযোগ আসবে, কিন্তু কাজে লাগানো সহজ হবে না।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রিয়াল আক্রমণ বাড়ায়, তবে শেষ স্পর্শে ধার ছিল না। ঠিক তখনই ম্যাচের ৩৮ মিনিটে হঠাৎ আলো জ্বলে ওঠে বার্নাব্যুতে। ডান দিক থেকে রদ্রিগোর নিখুঁত ক্রস, আর বক্সের ভেতর উঠে এসে জুড বেলিংহ্যামের শক্তিশালী হেড—জাল কাঁপে, রিয়াল এগিয়ে যায়। গ্যালারির গর্জনে চাপা পড়ে যায় আগের সব হতাশা।
বিরতির পর ম্যাচ যেন আরও খোলামেলা হয়ে ওঠে। একের পর এক আক্রমণ, দুই প্রান্তেই রোমাঞ্চ। সেভিয়ার আলেক্সিস সানচেস ও রোমেরোর শট দুর্দান্ত দক্ষতায় সামলান কোর্তোয়া। অন্যদিকে এমবাপের শট, হেড—সবকিছুরই সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান সেভিয়ার গোলরক্ষক, একবার তো বল পোস্টেও লেগে ফিরে আসে।
৬৬ মিনিটে আবারও নায়ক হয়ে ওঠেন কোর্তোয়া, সানচেসের জোরালো শট উড়িয়ে দিয়ে। কিন্তু দুই মিনিট পরই বড় ধাক্কা খায় সেভিয়া। বেলিংহামকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মার্কাও। দশজনের দলে পরিণত হয় তারা, আর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আরও শক্ত করে লস ব্লাংকোসরা।
শেষের দিকে চাপ বাড়াতে থাকে স্বাগতিকরা। নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট বাকি থাকতে রদ্রিগো বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজে। স্পট কিক নিতে এগিয়ে আসেন কিলিয়ান এমবাপে—নিজের জন্মদিনের ম্যাচ, সামনে রেকর্ডের হাতছানি। ঠান্ডা মাথায় বল জালে পাঠান তিনি। এরপর সেই চেনা ‘সিউ’ উদযাপন, যেন এক মুহূর্তে ফিরে এলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
এই গোলে এক পঞ্জিকাবর্ষে রিয়ালের হয়ে ৫৯ গোল করে রোনালদোর রেকর্ডে ভাগ বসালেন এমবাপে। একই সঙ্গে চলতি লা লিগায় ১৮ ম্যাচে তার গোল হলো ১৮টি।
শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমাল তারা, আর বছরের শেষ ম্যাচটা শেষ করল আত্মবিশ্বাস আর স্বস্তি নিয়ে। ১৮ ম্যাচে ১৩ জয়, ৩ ড্র আর ২ পরাজয়ে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যাবির দল। এক ম্যাচ কম খেলে ১ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে আছে চির প্রতিদ্বন্দী বার্সেলোনা।