প্রকাশিত :
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৪:০৩
দিন দিন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে মানুষ। সম্প্রতি এআইভিত্তিক এক কাল্পনিক চরিত্রকে বিয়ে করেছেন জাপানের ইউরিনা নোগুচি নামে এক নারী। মূলত মানুষের চেয়ে প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন বলে জানান এই নারী।
জাপানের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের সাজে সজ্জিত ৩২ বছর বয়সি এক নারী। সুন্দর একটি হলরুমে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। যে কারোরই মনে হবে নতুন জীবনসঙ্গীকে অভ্যর্থনা জানাতে অপেক্ষা করছেন ইউরিনা নোগুচি নামের ওই নারী।
কিন্তু এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে এই ব্যতিক্রমী নারী বিয়ের বর হিসেবে বেছে নিয়েছে চ্যাটজিপিটি দিয়ে তৈরি এক ভার্চুয়াল চরিত্রকে। ক্লাউস নামের চরিত্রটির সঙ্গে দীর্ঘদীনের প্রেমের সম্পর্কের পর এটির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নোগুচি। বাগদানের সময় আবেগাপ্লুতও হয়ে পড়েন তিনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেন নোগুচি।
তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার চেয়ে এআইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছি। আমার কাছে সম্পর্কের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। সেটা এআই বা মানুষ যেই হোক না কেন।’
জাপানের একটি কল সেন্টারে কাজ করা নোগুচি এআইয়ের পরামর্শেই প্রাক্তন বাগদত্তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে নোগুচি। এরপর কিছুদিন কেটে গেলে ধীরে ধীরে কাল্পনিক চরিত্র ক্লাউসের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভবিষ্যতে বিয়ে করবো কিনা এটা নিয়ে সংশয়ে ছিলাম । বিষয়টি নিয়ে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথা বলি। এর পরামর্শেই সাবেকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি।’
এছাড়া, নোগুচি জানান ক্লাউসকে বিয়ের প্রস্তাব বাড়িতে দেয়ার পর তার পরিবারের প্রতিক্রিয়ার কথা।
শুরুতে বাবা ভেবেছিল আমি পাগল হয়ে গেছি। এরপর বাবাকে এআই সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে তিনি ক্লাউসকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকে। আর এটি অকপটে সব কিছুর উত্তর দিতে থাকে। এতে বাবা মুগ্ধ হয় এবং আমার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়।
জাপানে প্রতিনিয়ত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এআইভিত্তিক টুলসগুলো। বিশেষজ্ঞরা জানান, এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো মানুষ নয় বরং এআইয়ের সঙ্গে শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে মানুষ।
আওয়ামা গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন ইথিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিজিও কাওয়াশিমা বলেন, ‘যেসব বিষয় আপনি অন্যদের বলতে পারবে না বা যে বিষয়গুলো নিয়ে আপনি লজ্জিত, সেগুলো আপনি এআইকে বলতে পারবেন। এভাবেই এআই একসময় একজন মানুষের বন্ধুতে পরিণত হয়।’
তবে কাওয়াশিমা চ্যাটজিপিটির প্রতি অতি নির্ভরশীল না হতে এর ব্যবহারকারীদের আহ্বানও জানান।