সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে সুন্দর ও উন্নত বিশ্ব গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ইউনূস আন্তর্জাতিক আহ্বান: মুনাফাভিত্তিক পুঁজিবাদের বিকল্প খুঁজে নিতে হবে এখনই
প্রকাশিত :
২৮ জুন ২০২৫, ১:৫৭:৫৬
আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে ইউনূসের বার্তা
লন্ডনে অনুষ্ঠিত "Global Social Business Summit 2025"-এ মূল বক্তা হিসেবে ইউনূস বলেন:
“লাভ নয়, মানবিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। ব্যক্তি ও রাষ্ট্র উভয়েরই চিন্তা করা উচিত, কীভাবে পুঁজিবাদকে সামাজিক কল্যাণের দিকেই মোড় নেয়া যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই এমন একটি বিশ্ব, যেখানে কেউ বেকার থাকবে না, কেউ দারিদ্র্যের শিকার হবে না, আর পৃথিবী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।”
সামাজিক ব্যবসা বলতে কী বোঝায়?
- এটি এমন এক ব্যবসায়িক মডেল, যেখানে উদ্যোক্তার লক্ষ্য লাভ নয়, বরং সমাজের কোনো সমস্যার সমাধান করা।
- অর্জিত লাভ ব্যবসায় পুনর্বিনিয়োগ করা হয়, ব্যক্তিগতভাবে বিতরণ করা হয় না।
- উদাহরণ হিসেবে তিনি গ্রামীণ শক্তি, গ্রামীণ ড্যানোন এবং গ্রামীণ-ভিওলা প্রকল্পগুলোর কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসার প্রভাব
- গ্রামীণ ব্যাংক মডেল থেকে শুরু করে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাব্যবস্থা, সৌরবিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে সামাজিক ব্যবসার সফল উদাহরণ তুলে ধরা হয়।
- বর্তমানে বাংলাদেশে ৩০০-এর বেশি সামাজিক ব্যবসা সক্রিয়, যার মাধ্যমে হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
- বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে সামাজিক ব্যবসার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৈশ্বিক বাস্তবতায় প্রয়োজনীয়তা
- জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক বৈষম্য, প্রযুক্তিনির্ভর বেকারত্ব ইত্যাদি বর্তমান বিশ্বের বড় চ্যালেঞ্জ।
- এসব সমস্যা সমাধানে কেবল মুনাফা-ভিত্তিক ব্যবসা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন একটি মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো।
- ইউনূস বলেন, “শুধু রাষ্ট্রের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিলে চলবে না, প্রতিটি মানুষকে উদ্যোক্তা হতে হবে এটাই ভবিষ্যতের পথ।”
বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া
- অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা মডেলকে ভবিষ্যতের জন্য টেকসই ও কার্যকর সমাধান হিসেবে দেখছেন।
- কেউ কেউ বলছেন, এটি পুঁজিবাদের একটি উন্নত সংস্করণ, যা সমাজ ও পরিবেশ উভয়েরই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।