প্রকাশিত :
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩:৩০
অ্যাডিলেড টেস্টের পঞ্চম দিনে সমীকরণটা ছিল বেশ রোমাঞ্চকর—ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ২২৮ রান, হাতে মাত্র ৪ উইকেট। কাগজে-কলমে হিসাব করলে আশা বাঁচিয়ে রাখার মতো তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। কিন্তু বাস্তবতা বলছিল অন্য কথা। শেষ পর্যন্ত সেই বাস্তবতাই নির্মমভাবে ধরা দিল বেন স্টোক্স-রুটদের সামনে।
প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া শেষ দিনে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ইংল্যান্ডকে থামিয়ে দেয় ৮২ রানের ব্যবধানে। এই জয়ের সঙ্গে-সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকরা।
২০১০–১১ মৌসুমের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আর অ্যাশেজ জয়ের স্বাদ পায়নি ইংল্যান্ড। ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই আক্ষেপ ঘোচাতে পারলেন না স্টোকসরা। পার্থ, ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেড—এই তিন ভেন্যুতে মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই সিরিজের তিনটি টেস্ট শেষ হয়ে যায়। অ্যাশেজ ইতিহাসে এত অল্প সময়ে সিরিজ নিষ্পত্তির ঘটনা খুবই বিরল।
সিরিজের শুরুটা হয়েছিল পার্থে। প্রথম টেস্টেই দুই দিনের মধ্যে ম্যাচ শেষ করে ২০৫ রানের বড় জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ট্রাভিস হেডের ঝলমলে সেঞ্চুরি তখনই সিরিজের সুর বেঁধে দেয়। এরপর ব্রিসবেনে দিবা-রাত্রির টেস্টে ইংল্যান্ড আরও চাপে পড়ে। গোলাপি বলের চ্যালেঞ্জ সামলাতে না পেরে ৮ উইকেটে হেরে যায় তারা। দুই ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়া তখন ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে, আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর।
অ্যাডিলেডে তৃতীয় টেস্টে অবশ্য আগের দুই ম্যাচের তুলনায় কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে ইংল্যান্ড। সিরিজে প্রথমবারের মতো একটি টেস্ট পাঁচ দিন পর্যন্ত টেনে নিতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। কিন্তু লড়াই যতই দীর্ঘ হোক, পরিণতি বদলায়নি।
পঞ্চম দিনের শুরুতেই বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুকের বিদায়ে ইংল্যান্ডের আশা প্রায় শেষ হয়ে যায়। সপ্তম উইকেটে উইল জ্যাকস ও জেমি স্মিথ ৯১ রানের জুটি গড়ে সাময়িকভাবে ম্যাচে রোমাঞ্চ ফেরান। স্মিথ ৮৩ বলে ৬০ রান করে আউট হলে ইংল্যান্ডের ভাগ্য কার্যত সেখানেই নির্ধারিত হয়ে যায়। জ্যাকস শেষ পর্যন্ত লড়াই চালালেও, ব্রাইডন কার্সকে সঙ্গে নিয়ে আর ম্যাচ ঘোরাতে পারেননি।
সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ স্বপ্নের চিত্রটা ছিল পূর্বনির্ধারিত গল্পের মতই—চেষ্টা ছিল, প্রতিরোধ ছিল, কিন্তু শেষ হাসিটা হাসল মাইটি অস্ট্রেলিয়াই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ৩৭১ ও ৩৪৯
ইংল্যান্ড: ২৮৬ ও ৩৫২
ম্যাচ সেরা: ক্যারি
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানে জয়ী
সিরিজ: অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ৩-০