প্রকাশিত :
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫২:৫৬
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি। এ সময় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নৈরাজ্য প্রতিরোধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। একটি পুরনো চিহ্নিত মহল দেশে ফ্যাসিবাদের একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করতে চাচ্ছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাই। হত্যাকারী শাস্তি ও বিচারের আবারও দাবি জানাচ্ছি। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল মাঝরাতে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ অগ্নিসংযোগ করেছে। কর্মরত সাংবাদিকদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশবরেণ্য সাংবাদিক নুরুল কবিরের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। ছায়ানটসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। আজ উদীচী কার্যালয় হামলা হয়েছে। আমরা এই ঘটনাবলীর প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও ঘৃণা প্রকাশ করছি। এ ঘটনা প্রমাণ করে একটি পুরনো চিহ্নিত মহল দেশকে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্যের পথে ধাবিত করতে চায়। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের ভোটাধিকার তথা গণতান্ত্রিক অধিকার তারা নস্যাৎ করে দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদের একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করতে চাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, সরকারের নাগের ডগাতেই তারা এ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণও মনে করছে সরকারের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। ফলে দেশ-বিদেশে সরকার তথা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়ে চলেছে। এ ধরনের ঘটনাকে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন তথা গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র বলেই আমরা মনে করছি।
তিনি আরও বলেন, এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারীদের আমরা হুঁশিয়ারি করে দিতে চাই এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে দিতে পারি না। এই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে নৈরাজ্যবিরোধী সকল রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আমরা যেভাবে স্বৈরাচারের পতন ও নির্বাচন আদায় করে নিয়েছি তারই ধারাবাহিকতাতে সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয় এবং সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে রাত রাত পৌনে ৯টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি এ বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।